যারা প্রথম পর্ব পড়েননি [url=http://www.sachalayatan.com/guest_writer/33356]এখানে[/url] ক্লিক করুন।
বাংলায় লিখতে চান, অথচ বানানকে ভয় পান না এমন লোক কমই আছে। বাজারে প্রচলিত স্পেল চেকারগুলো তেমন কার্যকরী নয়। আর যদি কখনও হয়ও, স্বাবলম্বী হওয়াটাই ভালো মনে করি। অন্তত যতটুকু সম্ভব। বিশেষত যখন বানানরীতি একটি চলমান বিষয়। এবং বাংলা বানানের বিশৃঙ্খলাটাও যখন আজকের নয়।
যতটুকু জানা যায়, আঠারো শতক পর্যন্ত বাংলা বানানে রীতিমতো নৈরাজ্য চলছিল। তখন ‘বাংলা বানান ছিলো স্বাধীন স্বেচ্ছাচারী–লেখক বা লিপিকরের উচ্চারণ অনুসারেই লিখিত হতো বানান।’ (হুমায়ুন আজাদ, বাংলা ভাষা, প্রথম খণ্ড)।
ঐতিহ্যগতভাবে পালির সাথে বেশি মিল থাকলেও মধ্যযুগে, বিশেষত
[url=http://en.wikipedia.org/wiki/Chaitanya] শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর[/url] (১৪৮৬–১৫৩৪ খ্রি.) সময় থেকে বাংলার ওপর সংস্কৃত ভাষার প্রভাব বাড়ছিল।
–সূত্র : [url=http://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE_%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A6%BE#.E0.A6.87.E0.A6.A4.E0.A6.BF.E0.A6.B9.E0.A6.BE.E0.A6.B8]উইকিপিডিয়া[/url]
উনিশ শতকে বাংলা বানানে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার সচেতন প্রয়াস চলে। এ-কাজের নেতৃত্ব যাঁরা দেন, তাঁদের প্রধান ছিলেন [url=http://en.wikipedia.org/wiki/William_Carey_%28missionary%29]উইলিয়াম কেরি[/url]। কেরি ও তাঁর সতীর্থ-সমমনারা ছিলেন সংস্কৃতজ্ঞ ও সংস্কৃত-অনুরাগী। ফলে, তাঁদের চেষ্টায় বাংলা বানান তখন সংস্কৃত ব্যাকরণের অনুশাসন অনুসারী হয়ে পড়ে।
—সূত্র : মুহাম্মদ শহীদুল ইসলাম (বাংলা একাডেমীর বানান-অভিধান ও বানানরীতি)। [url=http://www.kaliokalam.com/?p=221]কালি ও কলম [/url]-এ প্রকাশিত।
উনিশ শতকের গোড়া থেকে বাংলা গদ্যে তদ্ভব, দেশি, বিদেশি শব্দের আধিক্য দেখা যায়। এর একটি কারণ ভারতীয় তথা বঙ্গীয় অঞ্চলে বিদেশি ও তাদের ভাষার আগমন। বিশ শতকে গদ্যে চলিতরীতি প্রতিষ্ঠা পেতে থাকে। বাংলা ভাষায় একটি বানানরীতি থাকা প্রয়োজন, তা না হলে বাংলা বানানের সূত্রছিন্ন হতে পারে–এই প্রয়োজন ও আশঙ্কা প্রকাশ প্রথম করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর ব্যক্তিগত অভিপ্রায় অনুসারে সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ একটি প্রাথমিক বানানরীতি তৈরি করেন। এরপর বাংলা বানান নিয়ে সুধীমহলে ব্যাপক আলোচনা আরম্ভ হয়। রবীন্দ্রনাথ তখন অনুরোধ ও প্রস্তাবসহ এই বানানরীতিটি তুলে দিলেন তৎকালীন ভারতের বৃহৎ বিদ্যায়তন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে। রবীন্দ্রনাথের অনুরোধ ও প্রস্তাবের প্রতি বরেণ্য কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়েরও অকুণ্ঠ সমর্থন ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৩৫ সালে 'কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বানান সংস্কার সমিতি' গঠন করে। এটাই বাংলা বানান-সংস্কারে গঠিত প্রথম কোনো প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ। এই সমিতি ১৯৩৬ সালের ৮ মে প্রাতিষ্ঠানিক ও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম 'বাংলা বানানের নিয়ম' প্রকাশ করে।
—সূত্র : ড. সৌমিত্র শেখর, সহযোগী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। [url=http://www.dailykalerkantho.com/?view=details&archiev=yes&arch_date=21-02-2010&type=single&pub_no=84&cat_id=2&menu_id=23&news_type_id=1&index=1]কালের কণ্ঠে প্রকাশিত[/url]।
বাংলা একাডেমী ওই নিয়মগুলোকে ভিত্তি করেই এখনকার বানানরীতিটি প্রচলন করেছে। অতি প্রয়োজনীয় কিছু ক্ষেত্রে সংস্কার করা হয়েছে, যার ফলে এটি আরও বেশি আধুনিক ও যুগোপযুগী হয়েছে। কিন্তু এখনও অনেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন নিয়মগুলোই অনুসরণ করে চলেছেন। তাই হয়তো বিভ্রান্তি কমছে না।
এসব বিভ্রান্তির মায়াজালে পড়ে প্রতিনিয়ত ভুলে ভরা লেখা প্রকাশিত হয়ে যাচ্ছে। পত্রিকা বা বইপত্রে সাধারণত যেকোনো লেখাই কয়েকটি স্তর (সম্পাদনা, প্রুফ-সংশোধন, ইত্যাদি) পার হয়ে প্রকাশিত হয়, তার পরও অসঙ্গতি বা ভুল বানানের দৌরাত্ম্য সেখানে কম নয়। তাহলে ভাবুন অনলাইন প্রকাশনার কথা! আমরা যা লিখছি তা সরাসরি প্রকাশিত হয়ে যাচ্ছে, সংশোধনের কেউ নেই। তাহলে লেখালেখির সময় আমাদের আরেকটু সচেতন হওয়া প্রয়োজন না?
অসুবিধে নেই। আপনার পাশে থাকবে বানানায়তন। আজকের বানানাসরের বিষয় হিসেবে বাংলা বানানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি সমস্যা ও তার সমাধানের কথা তুলে ধরা হলো।
[size=20]ও এবং ও-কার সংক্রান্ত সমস্যা[/size]
[i]ও কি এল, ও কি এল না, বোঝা গেল না–
ও কি মায়া কি স্বপনছায়া, ও কি ছলনা।।
ধরা কি পড়ে ও রূপেরই ডোরে,
গানেরই তানে কি বাঁধিবে ওরে–
ও যে চিরবিরহেরই সাধনা।।
ওর বাঁশিতে করুণ কী সুর লাগে
বিরহমিলনমিলিত রাগে।
সুখে কি দুখে ও পাওয়া না-পাওয়া,
হৃদয়বনে ও উদাসী হাওয়া,
বুঝি শুধু ও পরমকামনা।। [/i]
—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (বিচিত্র)
মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে ছোট্ট একটা পরীক্ষা হয়ে যাক, কী বলেন? দেখুন তো নিচের বাক্যগুলোর বানান ঠিক-ঠাক আছে কি না—
তোমার [i]মত [/i]কে আছে?
এ কেমন কথা [i]হল[/i]?
[i]কেনো[/i] এ-কথা [i]বলছো[/i]?
[i]আরো [/i]আঘাত সইবে আমার।
ভাবতে থাকুন। উত্তর পাওয়া যাবে আলোচনার মধ্যেই। তাহলে আসুন আলোচনা শুরু করা যাক।
[size=17]বাংলা বানানে অ-কারের [i]ও[/i] উচ্চারণ নির্দেশের জন্য যথেচ্ছভাবে ও-কার (ো) ব্যবহারের যে-প্রবণতা দেখা যায়, বাংলা একাডেমী তা সমর্থন করে না[/size]—
[size=20]বাংলা একাডেমী প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম ২.০৯. ও[/size]
[i]বাংলা অ-কারের উচ্চারণ বহুক্ষেত্রে ও-কার হয়। এই উচ্চারণকে লিখিত রূপ দেওয়ার জন্য ক্রিয়াপদের বেশ কয়েকটি রূপের এবং কিছু বিশেষণ ও অব্যয় পদের শেষে, কখনও আদিতে অনেকে যথেচ্ছভাবে ও-কার ব্যবহার করছেন। যেমন : ছিলো, করলো, বলতো, কোরছ, হোলে, যেনো, কেনো (কী জন্য), ইত্যাদি ও-কারযুক্ত বানান লেখা হচ্ছে। বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া অনুরূপ ও-কার ব্যবহার করা হবে না।[/i]
[i]বিশেষ ক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছে এমন অনুজ্ঞাবাচক ক্রিয়াপদ এবং বিশেষণ ও অব্যয় পদ বা অন্য শব্দ যার শেষে ও-কার যুক্ত না করলে অর্থ অনুধাবনে ভ্রান্তি বা বিলম্ব ঘটতে পারে। যেমন : ধরো, চড়ো, বলো, বোলো, জেনো, কেনো (ক্রয় করো), করানো, খাওয়ানো, শেখানো, করাতো, মতো, ভালো, আলো, কালো, হলো।[/i]
[size=22]বিশ্লেষণ[/size] :
[size=20]ও-কার বর্জন করতে হবে[/size]—
[size=17]ক্রিয়াপদের বেশ কয়েকটি রূপের ক্ষেত্রে—শেষে[/size] : যথা—ছিলো, করলো, বলতো, করছো, শোবো, উঠবো, নেবো, ইত্যাদি না লিখে লিখব—ছিল, করল, বলত, করছ, শোব, উঠব, নেব, ইত্যাদি।
ক্রিয়াপদের বিভিন্ন রূপের কিছু সঠিক বানান নিচে দেওয়া হলো উদাহরণ হিসেবে—
ঘটমান বর্তমান কাল : ধরছ, চড়ছ, বলছ, হচ্ছ, খাচ্ছ, যাচ্ছ, বানাচ্ছ, নিচ্ছ, লিখছ, দিচ্ছ
পুরাঘটিত বর্তমান কাল : ধরেছ, চড়েছ, বলেছ, হয়েছ, খেয়েছ, গেছ, বানিয়েছ, নিয়েছ, দিয়েছ
সাধারণ অতীত কাল : ধরল, চড়ল, বলল, খেল, গেল, বানাল, ছিল, করল, নিল, দিল
ঘটমান অতীত কাল : ধরছিল, চড়ছিল, বলছিল, হচ্ছিল, যাচ্ছিল, বানাচ্ছিল, করছিল, লিখছিল, দিচ্ছিল
পুরাঘটিত অতীত কাল : ধরেছিল, চড়েছিল, বলেছিল, হয়েছিল, গিয়েছিল, বানিয়েছিল, করেছিল, লিখেছিল, দিয়েছিল
নিত্যবৃত্ত অতীত কাল : ধরত, চড়ত, বলত, খেত, যেত, বানাত, করত, লিখত, দিত, নিত
সাধারণ ভবিষ্যৎ কাল : ধরব, চড়ব, বলব, খাব, যাব, বানাব, করব, নেব, লিখব, উঠব, শোব
[size=17]ক্রিয়াপদের বেশ কয়েকটি রূপের ক্ষেত্রে—আদিতে[/size] : যথা—কোরছ, হোতে, ইত্যাদি না লিখে লিখব—করছ, হতে, ইত্যাদি।
পুরাঘটিত অসমাপিকা রূপ : ধোরে, চোড়ে, বোলে, হোয়ে, ইত্যাদি না লিখে লিখব ধরে, চড়ে, বলে, হয়ে, ইত্যাদি।
[size=17]বিশেষণ পদের শেষে[/size], যথা—যেনো, যতো. এতো, বড়ো, ছোটো, এক শো না লিখে লিখব—যেন, যত, এত, বড়, ছোট, এক শ, ইত্যাদি।
[size=17]অব্যয় পদের শেষে[/size], যথা—কেনো, কতো, ততো না লিখে লিখব—কেন, কত, তত ইত্যাদি।
[size=20]ও-কার দেওয়া হবে[/size]—
সুপ্রচলিত শব্দের উচ্চারণ, উৎপত্তি বা অর্থের ভেদ বোঝাতে অতিরিক্ত ও-কার যথাসম্ভব বর্জনীয়। যদি অর্থগ্রহণে বাধা হয় তবে কয়েকটি শব্দে অন্ত বর্ণে ও-কার দেওয়া হবে, যথা–মত, মতো; হল, হলো; ভাল, ভালো; কাল, কালো; কেন, কেনো; কোন, কোনো।
লক্ষ করে দেখুন প্রতিটি ক্ষেত্রেই কিছু সুনির্দিষ্ট কারণ রয়েছে ও-কার দেওয়ার পেছনে। যেমন—
[size=18]১. অনুজ্ঞাবাচক ক্রিয়াপদ হিসেবে[/size] (আদেশ, নিষেধ, উপদেশ, অনুরোধ ইত্যাদি বোঝাতে)—
[size=17]ক. বর্তমান অনুজ্ঞা[/size] : করো, দেখো, শেখো, আনো, এসো, বসো, লিখো, চড়ো ইত্যাদি। উদাহরণ : (তুমি/তোমরা) কাজটি করো। (তুমি/তোমরা) গাছে চড়ো।
তবে তুচ্ছার্থে ব্যবহৃত হলে ও-কার বসবে না। যেমন—কর, দেখ, শেখ, আন, বস, লিখ, চড় ইত্যাদি। উদাহরণ : (তুই/তোরা) এই কাজটি [i]কর[/i]। নে, ((তুই/তোরা)) গাছে চড়।
বর্ণনা অর্থে ব্যবহৃত হলেও ও-কার বসবে না। যেমন—কর, চড়, পার, ইত্যাদি।
উদাহরণ : কী [i]কর[/i]? তোমরা গাছে [i]চড়[/i]নি? তুমি লিখতে পার?
[size=17]খ. ভবিষ্যত অনুজ্ঞা[/size] : কোরো, বোলো, ধোরো, খেয়ো, যেয়ো, বানিয়ো। উদাহারণ : কাজটি কোরো (ভবিষ্যতে করো)। আমার কথা তাকে বোলো (ভবিষ্যতে বলো)।
[size=18]২. সাধিত ধাতুর অসমাপিকা রূপ—[/size]
সাধিত ধাতুর অসমাপিকা রূপ সাধারণত আনো প্রত্যয়ান্ত হয়। এসব শব্দের শেষে ও-কার যুক্ত করা হবে। যেমন—করানো, বলানো, খাওয়ানো, পাঠানো, নামানো, শোয়ানো, ধরানো, বানানো, ইত্যাদি।
[size=18]৩. অর্থের পার্থক্য পরিষ্কার করতে—[/size]
মত/মতো
তোমার [i]মত[/i] কি নেই! (তোমার সায় আছে না নেই)
তোমার [i]মতো[/i] কি নেই! (তোমার অনুরূপ আছে না নেই)
হল/হলো
এটা কি একটা সিনেমা [i]হল[/i]? (এটা কোনো সিনেমা হল কি না)
এটা কি একটা সিনেমা [i]হলো[/i]? (সিনেমার মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে)
কেন/কেনো
এই জামাটা [i]কেন[/i] (কিসের জন্য)
এই জামাটা [i]কেনো[/i] (ক্রয় করো)
কোন/কোনো
[i]কোনটা[/i] কিনছ? (নির্দিষ্ট অর্থে)
[i]কোনোটা[/i] কিনছ? (অনির্দিষ্ট অর্থে)
একইভাবে, [i]কাল/কালো, করাত/করাতো, ভাল/ভালো, হত/হতো, দেব/দেবো, হব/হবো[/i] ইত্যাদি শব্দগুলোর আলাদা আলাদা অর্থ আছে। তাই বাক্যে কোন অর্থে ব্যবহৃত হচ্ছে সেদিকে লক্ষ রেখে ও-কার গ্রহণ বা বর্জন করতে হবে।
বি.দ্র. অনেকে [i]তো[/i] লিখতে ভুল না করলেও [i]হয়তো[/i] লিখছেন [i]হয়ত[/i], [i]নয়তো[/i] লিখছেন [i]নয়ত[/i]। লিখুন—তো, হয়তো, নয়তো, এ তো, পার তো, বল তো, ইত্যাদি।
[size=20]ও নাকি ও-কার?—প্রশ্নটা প্রায় সবার[/size]!
[i]আরো[/i] লিখব, না [i]আরও[/i] লিখব?
[i]আজো[/i] লিখব, না [i]আজও[/i] লিখব?
[i]এখনো[/i] লিখব, না [i]এখনও[/i] লিখব?
উত্তরটা কিন্তু তেমন কঠিন নয়। শব্দগুলো উচ্চারণ করেই দেখুন। তবুও সন্দেহ দূর না হলে অভিধান খুলে দেখুন ও অক্ষরটির ব্যাপারে কী বলা আছে সেখানে?
[size=20]ও[/size]—সংযোজক অব্যয়। ১. পর্যন্ত ([i]এখনও[/i] গেল না আঁধার—রঠা/[i]আজও[/i] বসে আছি তোমার অপেক্ষায়—কুবা) ২. মাত্রাধিক্য বোঝাতে ([i]আরও[/i] আঘাত সইবে আমার—রঠা)
তাই লিখুন—এখনও, আরও, আজও, ইত্যাদি।
তাহলে ভালো, মতো, করানো, মন-মাতানো, হাজারো, আধো, কোনো, ইত্যাদি শব্দের ক্ষেত্রে কেন [i]ও [/i]নয়, [i]ও-কার[/i] (ো) দিতে হবে?
কারণ এসব শব্দের [i]ও[/i] বাংলা পদান্তিক অ-স্বরের অর্ধস্ফুট উচ্চারণ জাত। অর্থাৎ এগুলোর [i]ও[/i] উচ্চারণ ততটা পরিষ্কার নয়। তাই –কার চিহ্ন।
[size=20]ও-কার (ো) ব্যবহারের আরও কিছু নিয়ম[/size]
১. অ বা আ-কারের পর উ কিংবা ঊ-কার থাকলে উভয়ে মিলে ও-কার (ে া) হয়। ও-কার পূর্ববর্ণে যুক্ত হয়। যেমন—
অ + উ = ও-কার > পর + উপকার = পরোপকার
অ + উ = ও-কার > সূর্য + উদয় = সূর্যোদয়
অ + ঊ = ও-কার > নব + ঊঢ়া = নবোঢ়া
আ + উ = ও-কার > কথা + উপকথন = কথোপকথন।
২. অ-কারের পরস্থিত স-জাত বিসর্গের পর স্বরবর্ণের ‘অ’ কিংবা অন্য কোনো ঘোষবর্ণ থাকলে ‘অ’ স্থলে ও-কার হয়। ও-কার পূর্ববর্ণে যুক্ত হয়। যেমন—
মনঃ + রঞ্জন = মনোরঞ্জন, সরঃ + বর = সরোবর,
সদ্যঃ + জাত = সদ্যোজাত, তপঃ + বন = তপোবন।
৩. মধ্য ও-ধ্বনি সর্বত্রই ও-কার দিয়ে লিখতে হবে। মধ্যবর্ণে [i]ও [/i]উচ্চারণে ও-কার যুক্ত না করা হলে উচ্চারণ বিকৃতির আশঙ্কা থেকে যায়। যেমন—
পুরনো———পুরোনো
ভৌগলিক——ভৌগোলিক
৪. মূল ইংরেজি শব্দে O থাকলে সাধারণত প্রতিবর্ণে ও-কার হয়। যেমন— বোনাস (Bonus), পোলার (Polar), নোট (Note), ফোনেটিক (Phonetic), বোট (Boat) ইত্যাদি।
ফুটনোট : প্রথমবার ব্লগটি সংরক্ষণ করার সময় একটি ভুল (ভুলটি ধরিয়ে দেবার জন্য মুর্শেদ ভাইকে আর ধন্যবাদ জানিয়ে খাটো করলাম না) ও বেশ কিছু অপূর্ণতা থেকে গিয়েছিল। ভুলটি সংশোধন করে আরও নতুন তথ্য ও অতিরিক্ত উদাহরণসহ আবার আপালাম। :D পোস্টটি নীড়পাতায় দেখা গেলে অবশ্য সমস্ত ধন্যবাদ মডারেটরবৃন্দই প্রাপ্য হবেন।
***
ছবি : উইকিপিডিয়া থেকে
তথ্য সূত্র ও বিশেষ কৃতজ্ঞতা : বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান, উইকিপিডিয়া
কুটুমবাড়ি
mhdrakib@gmail.com
Nextel Blackberry 8350i Review
উত্তরমুছুনMotorola Nextel i418 radio Review
Motorola Ht1000 Review
Motorola Cdm1250 Radio Review
How to Program Motorola Ht1000 W
How to Program a Kenwood
Lenovo IdeaPad Y570 Review
Hard Disk Error
Best Midsize Pc Case
Apple Magic Mouse